মিলন খন্দকার হত্যায় দাউদকান্দি থানায় ১৫ জনকে আসামী করে মামলা ॥ওসির অপসারণ দাবি ॥ মহাসড়ক অবরোধ ॥ বিক্ষোভ মিছিল

মাহ্ফুজ ইসলাম শিপ্লু, দাউদকান্দি ॥ দাউদকান্দির সাবেক পৌর কমিশনার ও আ’লীগ নেতা মিলন খন্দকারের খুনের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে হাজার হাজার জনতা মহাসড়ক অবরোধ করে দাউদকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন কৃষ্ণ নাথের অপসারণ দাবি করেন। কুমিল্লা সহকারী পুলিশ সুপার (মুরাদনগর সার্কেল) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ওসিকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে অবরোধকারীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেয়। প্রায় এক ঘন্টা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধকালে র্দীঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়ারা মিলন খন্দকারের লাশ কাঁধে নিয়ে ওসির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান এবং খুনিদের বিচারের দাবিতে থানার সামনে মিছিল করে। র‌্যাব ও পুলিশের কঠোর পহারায় উপজেলা ডাকবাংলো মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে র‌্যাব ও পুশিলের পাহারায় দাউদকান্দি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ কবরস্থানে মিলনের লাশ দাফন করা হয়। এ সময় মহাসড়ক, ঈদগাহ ও পৌরসদর এলাকায় অসংখ্য র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। মিলন হত্যায় দাউদকান্দি পৌর সভার সকল দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়।

এ ব্যাপারে দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন কৃষ্ণ নাথ বলেন, প্রতিপক্ষ ফারুক খন্দকারকে পুলিশ পাহারায় বাড়ি  পাঠানো হয়েছে তা ঠিক নয়। তবে উভয় পক্ষের মামলা নেওয়ার পর মিলন খন্দকার ও ফারুক খন্দকার দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আনোয়ারুল নাসেরের উপস্থিতিতে জানান, তারা বাড়িতে বসে এ সমস্যা সমাধান করবেন। মিলন খন্দকারের খুনের ঘটনায় তার ছোট ভাই মিরাজ খন্দকার বাদী হয়ে ১৫ জন নামধারী এবং ৩৫ জনকে অজ্ঞাত করে বৃহস্পতিবার রাতে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-১ তারিখ ০১/১২/১১ইং। মামলার আসামীরা হলেন ১। মোঃ শাহজাহান মিয়া (৪৮), ২। মোঃ ফারুক খন্দকার (৩৫), ৩। ডালিম খন্দকার (৩০), ৪। কাশেম খন্দকার (৫৯), ৫। পারভেজ খন্দকার (২৭), ৬। দিলবার হোসেন (২৫), ৭। মোঃ আলমগীর হোসেন (২৬), ৮। শালিঙ্গীর হোসেন (২৭), ৯। রাকেশ মিয়া (২৫), ১০। ফকরুউদ্দিন খন্দকার (৩৮), ১১। ইব্রাহীম মিয়া (৪৫), ১২। বাবুল মিয়া (৩৮), ১৩। মোঃ রকিব উদ্দিন রকিব (৪২), ১৪। রুবেল সিকদার (২৮), ১৫। মোঃ নাজিম উদ্দিন (৩৮)। এ ঘটনায় পুলিশ কাশেম খন্দকার ও তার পুত্র ফরিদ খন্দকারকে গ্রেফতার করে আজ শুক্রবার কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করে। এদিকে আজ শুক্রবার স্থানীয় সংসদ সদস্য বিদ্যূৎ,জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মে.জে.(অব.) সুবিদ আলী ভূইয়া এমপি, দাউদকান্দি উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোসাম্মৎ পারুল আক্তার, উপজেলা আ’লীগ সভাপতি আবুল হাশেম সরকার, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব চৌধুরী লিল মিয়া, বিশিষ্ট শিল্পপতি, সমাজ সেবক ও আ’লীগ নেতা হাজী মোঃ বশিরুল আলম মিয়াজী নিহত আ’লীগনেতা মিলন খন্দকারের বাড়িতে গিয়ে পরিবার পরিজনকে শান্তনা ও সমবেদনা জানান।

উল্লেখ্য ৩০ নভেম্বর বুধবার রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে  দাউদকান্দি পৌরসভার দোনারচরের রাস্তা দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা-গোমতী সেতু টোল প্লাজায় যাওয়ার পথে দৃস্কৃতিকারীরা তাকে দোনার চর গ্রামের তার নিজ বাড়ী থেকে ১৫০ গজ দক্ষিন দিকে বাচ্চু মিয়ার ঘরের উঠানে মিলন খন্দকারকে এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে জখম ও মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে দাউদকান্দি এলহাম হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।