নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বরিশালর আগৈলঝাড়া উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ পয়সারহাট নদীতে চর জেগে ওঠায় বন্দরের ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনকারী নৌ-যান ও ঢাকাগামী লঞ্চ চলাচল বন্ধ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
পয়সারহাট নদী দিয়ে ঢাকার সাথে নিয়মিত লঞ্চ যোগাযোগের মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ঢাকা থেকে মালামাল আনা নেয়া করছেন। গত কয়েক বছর যাবত নদীতে চর জেগে ওঠায় নৌ-পথে লঞ্চ চলাচল ব্যহৃত হচ্ছে। ফলে বন্দরের ব্যবসায়ীসহ আশেপাশের ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পয়সারহাট বন্দরটি প্রাচীনকাল থেকেই নদী বন্দর হিসেবে পরিচিতি। এ নদীপথে দক্ষিণাঞ্চলের ঝালকাঠী, বরিশাল, স্বরুপকাঠী, বানারীপাড়া, ভোলাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা ট্রলারসহ বিভিন্ন নৌ-যানে মালামাল আনা নেয়া করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চলতি মৌসুমে নদীর পানি কমে যাওয়ায় পয়সারহাট নৌ-বন্দর পল্টুন সংলগ্ন এলাকাসহ নদীর বিভিন্নস্থানে চর জেগে উঠেছে। ফলে নদী দিয়ে সবধরণের নৌ-যান চলাচল বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে। ভাটার সময় এপার থেকে ওপারে পারাপারের খেয়া নৌকাও চলাচল করতে পারছেনা।
নদী গবেষণা ইন্সটিটিউট সূত্রে জানা গেছে, পয়সারহাট নদীর ওপর দক্ষিণাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু নির্মাণ হওয়ায় নদীর নাব্যতা হারিয়ে চর জেগে উঠেছে। চরের মধ্যে স্থানীয়রা সবজী ও ইরি ধান চাষাবাদ করছেন।
স্থানীয়দের মতে, জরুরি ভিত্তিতে জনগুরুতপূর্ণ পয়সারহাট নদীটি ড্রেজিং করা না হলে আগামি ২-১ বছরের মধ্যে পুরো নদীর নাব্যতা হারিয়ে বালুচরে পরিণত হয়ে যেকোন সময় ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের সাথে এ নদী দিয়ে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, পয়সারহাট নদী নাব্যতা হারানোর ফলে বর্তমান ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার ছোট-বড় খালগুলো থেকে চাষাবাদের জন্য পানি সরবরাহে বড় ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। নদীতে চর জেগে ওঠায় বন্দরসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের দীর্ঘদিনের ব্যবসা-বানিজ্য নিয়ে চরম উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছেন। নাব্যতা সংকটের কারনে লঞ্চ মালিকরা ঢাকা-পয়সারহাট রুটে চলাচলকারী লঞ্চ মাঝে মধ্যেই বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। নদী ড্রেজিং করা না হলে ভবিষ্যতে এ নদীর মাধ্যমে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইরি-বোরো মৌসুমে সেচকাজ, নৌ-চলাচল ও ব্যবসা-বানিজ্যের সমস্যা আরো তীব্রতর হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।