৪০ বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি আগৈলঝাড়ার সতীশের

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ দেশ স্বাধীনতায় অংশ নিয়ে ৪০ বছর পরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি মেলেনি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সতিশ চন্দ্র রায়পশ্চিম কাঠিরা গ্রামের সতীশ চন্দ্র রায় (৬০)এর। একাধিকবার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে আবেদন করেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্ত করতে পারেনি সতীশ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন,’৭১ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারত গিয়ে ট্রেনিং নিয়ে গৌরনদী ও বরিশালের বিভিন্ন স্থানে হেমায়েত বাহিনীর হয়ে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন।

বর্তমানে তার ৩ মেয়ের মধ্যে ২ মেয়েকে কোন রকম বিয়ে দিতে পারলেও ছোট মেয়ে শ্যামা রায়কে কাঠিরা স্কুলে ৭ম শ্রেণীতে পড়াশুনা করাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। নিজস্ব কোন জমাজমি না থাকায় মেয়েদের আর্থিক সহযোগীতায় কোন রকমে তার সংসার চলছে। তিনি আরও জানান, তিনি বেজ কমান্ডার নুর-আলম শিকদার অধীনে মুক্তিযুদ্ধ করলেও সেই নূর-আলমের সহায়তাও তিনি পাচ্ছেননা। কাঠিরার নিজ বাড়িতে কোন রকম মাথা গোজার ঠাই হলেও মুক্তিযোদ্ধা সতিশের বর্তমানে দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। তিনি দু’বার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে গিয়ে তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করলেও অজ্ঞাত কারণে তার নাম তালিকা ভূক্ত হয়নি বলে জানান।

তিনি আক্ষেপ করে আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর পরেও কোন সরকার মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ভাবে তালিকা তৈরী করতে পারেনি। রোগাক্রান্ত অবস্থায় নিজ বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধা সতীশ একা দিন যাপন করেছেন। দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর কিছু দিন পূর্বে তার স্ত্রী বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অর্ন্তভূক্ত থাকলে মাসিক ভাতা পেয়ে স্ত্রীর চিকিৎসা সহ নিজেও কোন রকম দু’মুঠো খেয়ে কোন রকম বেচে থাকতে পারতাম বলে তিনি করুন আক্ষেপ করেন। হয়তোবা বিবাহিত মেয়েদের অর্থনৈতিক সহযোগীতা ছাড়া চলতে পারা সহ ছোট মেয়ের পড়াশুনা করাতে মানুষের কাছে হাত পেতে হতনা!

বয়সের ভারে নূব্জ রোগাক্রান্ত সতীশ নিজে কোন আয় রোজগার করতে না পারায় বর্তমানে ছোট মেয়ে শ্যামাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন যাপন করছেন। অর্থাভাবে স্বীকৃতি না পাওয়া এ মুক্তিযোদ্ধা মৌলিক অধিকার চিকিৎসা সেবা থেকেও বঞ্চিত রয়েছেন।