নতুন নেতৃত্বে উত্তর জনপদের সরকার বিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা

হিজলা প্রতিনিধিঃ বরিশাল উত্তর জনপদের রাজনীতির মাঠ প্রতিনিয়ত চাঙ্গা হয়ে উঠছে। দীর্ঘ দিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে বর্তমান কমিটি সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের বিষয়ে নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করে রাজনৈতিক মাঠের চাঞ্চল্যতা ফিরে এনেছেন। নতুন কমিটির সভাপতি মেজবা উদ্দিন ফরহাদ দায়িত্ব নেয়ার পর প্রতিনিয়ত বিভিন্ন উপজেলায় রাজনৈতিক কর্মকান্ড তদারকি করার পাশাপাশি সংগঠনকে গতিশীল করতে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচী পালন করছেন। জিয়াউর রহমান দল গঠন করার পর থেকেই বরিশাল উত্তর জেলা একটি সাংগঠনিক জেলা হিসাবে পরিচিতি লাভ করলেও নেতৃত্বের কারনে দীর্ঘ ১৭ বছর সংগঠনটির কোন কার্যকলাপ চোখে পরতোনা।

উত্তর জেলার রাজনীতি তৎকালীন সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন মঙ্গুর নেতৃত্বে থাকায় তিনি দলকে কুক্ষিগত করে নিজের মর্জি অনুযায়ী চালাতেন। সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য কোন কার্যালয় ছিলনা, ছিলনা কোন কার্যক্রম। দলকে নিজেরমতো ব্যবহার করতে গিয়ে সভাপতি দলকে দলীয় নেতাকর্মীদের থেকে দূরে সরিয়ে দেন। ভেঙ্গে পরে বরিশাল উত্তর জেলার আওতাধীন ৫টি থানা ও ৩টি পৌরসভার সাংগঠনিক কাঠামো। সংগঠন থেকে দুরে সরে যান সাংগঠনিক সম্পাদক আফসার হোসেন আলম। তার পদত্যাগের বিষয়ে নেতাকর্মীরা দায়ী করেছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী, সংস্কারপন্থী শাহ মোঃ আবুল হোসাইনকে। সাধারণ সম্পাদকের পদে এ্যাডঃ আব্দুর রব থাকলেও তিনি মাদারীপুরে আইন ব্যবসানিয়ে ব্য¯ত থাকতেন। অপরদিকে বরিশাল দক্ষিণ জেলার দায়িত্বে ছিলেন এ্যাডঃ মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি সাংগঠনিক কার্যক্রম দক্ষতার সাথে পরিচালনা করায় সর্বত্র দক্ষিণ জেলাকেই নেতাকর্মীরা মনে করত বরিশাল জেলা বিএনপি। ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি মোশাররফ হোসেন মঙ্গু সংস্কারপন্থী হিসাবে জিয়া পরিবারের বিরূদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ ঘোষণা করে বিএনপিকে ভেঙ্গে দিতে তৎপর হলে দল থেকে বহিস্কার না হলেও তৃনমূল নেতাকর্মীদের তোপের মুখে বরিশাল উত্তর জেলার সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরে যান। জেলা কাউন্সিলের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য মেজবা উদ্দিন ফরহাদ। ভৌগলীক অবস্থানের দিক থেকে বরিশাল উত্তর জেলা বিচ্ছিন্ন ৫টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হওয়া সত্বেও সীমিত সংখ্যক নেতাকর্মীদের নিয়ে বরিশাল শহরে কেন্দ্র ঘোষিত অধিকাংশ কর্মসূচী পালন করে। বর্তমানে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরিয়ে এনে সব কর্মসূচী পালন করছে।

যুবদল, মহিলা দল, ছাত্র দল, স্বেচ্ছা¡সেবক দল ও জাসাস সহ অধিকাংশ সংগঠনের তৃনমূলের কমিটি গঠন করে গতিশীল করে তুলছেন উত্তর জেলা বিএনপির রাজনীতি। উত্তর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কর্মতৎপরতার বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেন্দিগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সমবায় বিষয়ক  সম্পাদক সাহাবুদ্দিন হিমু জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর উত্তর জেলা বিএনপির কোন কার্যক্রম ছিলনা। বর্তমান কমিটির সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে সকল কর্মসূচী পালন করছে। আগের কমিটির সভাপতি সংস্কারপন্থী মোশাররফ হোসেন মঙ্গু এবং বেগম জিয়াকে সম্মানজনক পদ দেয়ার ঘোষক শাহ মোঃ আবুল হোসাইন উত্তর জেলাকে নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি হিসাবে ব্যবহার করতেন। সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ আঃ রব দুরে থাকার কারণে তার স্বাক্ষর নেয়া ছাড়া কখনওই প্রয়োজন মনে করতেন না। বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক এ্যাডঃ নুরূল আলম রাজুর সাথে আলাপকালে তিনি জানান সাবেক সভাপতি নিজের অর্থ বিত্তবৈভব বাড়ানো ছাড়া উত্তর জেলাকে গতিশীল করতে কোন কার্যক্রমই করেননি। বর্তমান কমিটি সংগঠনকে গতিশীল করে সরকার বিরোধী আন্দোলন কর্মসূচী পালন করতে সকল উপজেলা সহ উত্তর জেলা বিএনপিকে প্রস্তুত করে তুলছেন।

গৌরনদী পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক বদিউজ্জামান মিন্টু জানান গৌরনদী আগৈলঝাড়া কেন্দ্রীক রাজনীতি নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার আঃ সোবাহান ব্য¯ত না হলেও মনোনয়ন কেন্দ্রীক রাজনীতির উদ্দ্যেশ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের তোষামদে থাকেন। জেলা বিএনপির কোন কর্মকান্ডে আমরা তাকে পাইনা। এমনকি কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচী পালন করার জন্য তার সাথে যোগাযোগ করেও আমরা ব্যর্থ হই। জেলা বিএনপির রাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের নেতৃত্ব থাকায় সংগঠন গতিশীল হয়ে উঠছে। সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মুলাদী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস ছাত্তার খান জানান দীর্ঘ দিন সংগঠন অচল থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা উত্তর জেলার আওতাধীন সকল নেতাকর্মীদের সংগঠিত করছি। সাবেক সভাপতির নিজ স্বার্থ হাসিলের কারণেই সংগঠন পিছিয়ে ছিল। বর্তমানে সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল হওয়ায় উত্তর জেলা বিএনপি চাঙ্গা।