লিটু বাহাদুর – আগৈলঝাড়ায় ভুমিদস্যূ, চাদাবাজ, নারী লিপ্সু ও এক আতংকের নাম

আগৈলঝাড়া সংবাদদাতাঃ আগৈলঝাড়ায় এক নারী লিপসু, ভুমিদস্যূ চাদাবাজ, মামলা বাজ, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের নাটের গুরু এলাকায় এক মুর্তিমান আতংকের নাম বাগধার লোকমান বাহাদুর ওরফে লিটু। যে সরকারই ক্ষমতায় আসে সেই দলেরই নেতা বনে গিয়ে এলাকার সহজ সরল নিরহ দুর্বল মানুষদের জিম্মি করে রাম রাজত্ত কায়েম করে বিশাল বৈত্ত-বৈভবের মালিক বনে যান। তার রোষানল ও অপকৌশল থেকে ওই এলাকার নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরাও রেহাই পাচ্ছেননা। সরেজমিন, ভুক্তভোগী ও তথ্যানুসন্ধ্যানে বেরিয়ে এসেছে তার কু-কৃর্তির কাহিনি চিত্র।

জানাগেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের চাত্রিশিরা  গ্রামের মৃত. আবুল কাসেমের ছেলে লোকমান বাহাদুর ওরফে লিটু (৪২) তার কয়েক সহযোগী নিয়ে দীর্যদিন থেকে এলাকার নিরিহ মানুষদের দুর্বালতার সুযোগ নিয়ে উদ্দেশ্য প্রনোদীত ভাবে বিভিন্ন ভয়ভিতি দিয়ে চাদাবাজি, ধর্ষন, দখল, লুটতরাজ, জালজালিয়াতী করে বিত্তবৈভবের মালিক হন। বাগধা ইউনিয়নের চাদত্রিশিরা গ্রামের একাধিক ভুক্তভোগির সাথে কথা বলে জানাগেছে, ওই গ্রামের আফছের ভাট্রির ছেলে নিরক্ষর দীন মজুর জাফর ভাট্রির ৪ শতক জায়গা ক্রয় করে দলিল করতে গিয়ে ৪৪ শতক লিখে নেয় প্রতারক লিটু। এঘটনা প্রকাশ পেলে দিনমজুর অসহায় জাফর ভাট্রির ছেলে পনির ভাট্রি আগৈলঝাড়া থানায় একটি প্রতারনার অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়া বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্রির নিকট লিখিত ভাবে বিচারের দাবী জানান। এবিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ একাধিক বার নোটিশ দিয়ে তলব করলে লিটু বাহাদুর ওই নোটিশের তোয়াক্কা করেননি। বরং প্রভাবশালী লিটু ইউপি চেয়ারম্যানসহ প্রতিপক্ষকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। একই ভাবে বাগধা গ্রামের কালু ভাট্রির ছেলে সুলতান ভাট্রি, মজিবর ভাট্রি, সেলিম ভাট্রি তাদের ৪ শতক জায়গা বিক্রি করে লিটুর কাছে। সু-চতুর লিটু প্রতারনার মাধ্যমে ওই সম্পত্তি থেকে সোয়া ৯ শতক জায়গা প্রতারনার মাধ্যমে লিখে নেয়। এঘটনায়ও লিটুর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। লিটুর চাচাতো ভাই ফারুক বাহাদুর ও আজিজুল বাহাদুর জানান, তাদের পৈত্তিক সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে লিটুর সাথে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলা দায়ের করলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মিমাংশা করা হলেও ফারুক  শালিশের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও লিটু শালিশ ব্যাবস্থা মেনে নেয়নি। বর্তমানে মামলাটিও চলমান রয়েছে। স্থানীয় জবেদ আলী খন্দকারের ছেলে সোহরাব, মোবারক, শহিদের পৈত্তিক বাড়ী দখল  করে জীবন নাশের হুমকি দিলে বাড়ী ছেড়ে লিটুর ভয়ে দির্যদিন যাবত পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যত্র মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি ফিরে পাবার জন্য ইউনিয়ন পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন।

লিটুর চাচাতো ভাই মো. আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, চলতি বছর তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি জোড় পুর্বক দখল করে এবং তার রোপনকৃত গাছ কেটে নেয়ার প্রতিবাদ করলে তার উপর হামলা চালিয়ে আহত করে । এ ঘটনায় আমিনুল স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত ভাবে বিচারের দাবী জানান। ওই এলাকার আলেপ বাহাদুর, আ.রহমান ভাট্রি, আজিজুল বাহাদুর, খলিল ভাট্রি,ফারুক বাহাদুরসহ এলাকার অনেকেই অভিযোগ করেন তাদের নিজস্ব সম্পত্তি থেকে জোড় পুর্বক লক্ষাধিক টাকার গাছ কেটে নেয়, ধরে নেয় পুকুরের মাছ। ওই ঘটনায় বাগধা ইউনিয়ন পরিষদে শালিশ বিচারে লিটু দোষী সাবস্থ্য হলে গাছ স্থানীয় মেম্বর নুর হোসেন বাহাদুরের জিম্মায় রাখা হয়। ওই গাছ রাতের আধারে লিটু ও তার সহযোগীদের নিয়ে চুরি করে নেয়ার সময় হাতে নাতে এলাকাবাসীর কাছে ধরা পড়ে। এছাড়া নারী লোভী লিটু বাহাদুর একই গ্রামের সেকেন্দার বাহাদুরের স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে ধর্ষন করে। এ ঘটনায় রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ২৯/৯/১০ ইং নারী নির্যাতন আইনে মামলা করেন যার নং-জি আর ১০১। ওই মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। সুত্র আরও জানান ৩ বছর পুর্বে তার লোলুপ দৃষ্ঠি থেকে রেহাই পায়নি ছোট মামা হান্নানের স্ত্রী ও তার আপন ফুপাতো ভাই নুর তাজ এর স্ত্রী। ওই এলাকার অসহায় মজিবুর বাহাদুর এর প্রতিবন্ধি মেয়েকে অপহরন করে গৌরনদীর বাটাজোর আটকে রেখে মুক্তিপন আদায় করে অপহরনকারী লিটু। এঘটনায় ও তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এছাড়া নারী কেলেংকারীর একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। লিটুর  অত্যাচার ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তার বিরুদ্ধে স্থানীয়রা বাগধা ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় ১ডজন অভিযোগ দায়ের করেন।

এব্যাপারে বাগধা বাগধা ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, লিটু বাহাদুরের বিভিন্ন অপরাধে আমার নিকট বিস্তার অভিযোগ রয়েছে। তার অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। বিভিন্ন মহলে  অপপ্রচার ছড়াচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ছাইদুল হাওলাদার জানান, লিটু বাহাদুর বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। তার অত্যাচারে নির্যাতিতরা পরিষদে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এব্যাপারে লিটু বাহাদুর মোবাইল নাম্বারে সাংবাদিকদের জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাবুল ভাট্রির বিরুদ্ধে আমার তেমন কোন অভিযোগ নাই সে ভালো মানুষ। চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে বলেন নিজেকে রক্ষার জন্য মামলা করেছি।