বরিশাল মহানগর যুবদলে ওদের ক্ষমতার অবসান ঘটছে

শাহীন হাসান, বরিশাল ॥ বরিশাল মহানগর যুবদলের শাহীন/শামীম যুগের অবসান ঘটছে। অযোগ্য ও নিষ্ক্রিয় মহানগর যুবদলকে শক্তিশালী করতে এবার উদ্যোগ নিচ্ছেন স্থানীয় বিএনপির কর্ণধার ও সদর আসনের সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার। খুব শীঘ্রই বরিশাল মহানগর যুবদরে সভাপতি রফিকুল ইসলাম শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান শামীমের কমিটি বিলুপ্ত করে বর্তমানে চলমান আহবায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এতে সভাপতি করা হতে পারে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও যুবনেতা জিয়া উদ্দিন সিকদার এবং সাধারণ সম্পাদক করা হতে পারে বর্তমান ১৮নং  ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাবেক ছাত্রনেতা মীর জাহিদুল কবির জাহিদকে। এ নিয়ে বরিশালের যুবদলের রাজনীতিতে চলছে নানা গুঞ্জন।

জানা গেছে, জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া ও মীর জাহিদ উভয়েই বর্তমানে বরিশালে যুবদলকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে জিয়া উদ্দিন সিকদারের নামটি অগ্রগণ্য। জিয়া সিকদার ও সরোয়ারপন্থী অন্যান্য যুবদল নেতারা নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে কমিটি গঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে প্রায় ২৭টি ওয়ার্ডের কার্যক্রম। বাকিগুলো শেষ হলেই পূর্ণাঙ্গ করে কমিটি গঠনের জন্য কেন্দ্রে দাবি জানাবেন তারা। অন্যদিকে জিয়া-জাহিদ কমিটিতে এমপি সরোয়ার সুপারিশ করলেও বাঁধ সাধতে পারে কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। কারণ তিনি সরোয়ার গ্র“পকে পছন্দ করেন না।

অন্যদিকে জিয়া ও জাহিদের কমিটি কেন্দ্র থেকে সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব অনুমোদন দেবেন এমনটাও জানা গেছে। যদি এ কমিটি অনুমোদন হয় তবে বরিশালে নেতৃত্বের জোর ও কর্মী সংখ্যায় ভারী বিধায় জিয়ার কমিটিই প্রতিষ্ঠিত হবে এমনটাই ধারণা মহানগর বিএনপির সাথে সংশি¬ষ্ট একাধিক সূত্রের। এক্ষেত্রে হারিয়ে যাবে মহানগর যুবদলের রফিকুল ইসলাম শাহীন ও সম্পাদক আকতারুজ্জামান শামীমের নেতৃত্বাধীণ কমিটি। যে কারণে আসীন হতে পারে জিয়া-জাহিদ কমিটি। তার সুস্পষ্ট কারণ হিসেবে জানা গেছে, সরকার বিরোধী দলীয় যে কোন কর্মসূচি বিপুল নেতাকর্মী নিয়ে পালন করে জিয়া উদ্দিন সিকদার। ফলে তাদের দ্বারা কমিটি গঠন করা হলে ভালই চলবে বরিশাল মহানগর যুবদল এমনটাই ধারণা করছেন সকলে। এ সম্পর্কে আলাপকালে যুবদল নেতা জিয়া উদ্দিন সিকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কর্মীরা আমাদের নিকট গত বছর যুবদলের দায়িত্ব দিয়েছে। এখন মহানগর যুবদল অনেক শক্তিশালী। আমাদের নেতা এমপি সরোয়ারের অনুপ্রেরণায় আমরা এখন সরকার বিরোধী যে কোন কর্মসূচির জন্য প্রস্তুত। এবার যদি যুবদল থেকে দায়িত্ব দেয়া হয় তাহলে দায়িত্বটিকে আমানত ভেবে নিয়ে কাজ করবো। অপরদিকে পুনর্গঠিত হতে পারে জেলা যুবদলও। মহানগরে যেমন এমপি সরোয়ারের একক কর্তৃত্ব ঠিক তেমনি জেলায় বিএনপির সভাপতি হিসেবে আহসান হাবিব কামালের থাকতে পারে অবদান। সেক্ষেত্রে যুবনেতা হিসেবে অল্পসময়ে সার্থক মোমেন সিকদারের সভাপতি হবার কথাটি খুব জোরেসোরে শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সকল সাধারণ সম্পাদক ও পোড় খাওয়া নেতা খ্যাত জিএম আতায়ে রাব্বির নাম শোনা যাচ্ছে। যদি এ দু’জনকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয় তবে বরিশাল জেলা যুবদল প্রাণ ফিরে পেতে পারে। এক্ষেত্রে সরোয়ার গ্র“প থেকে সভাপতি হিসেবে বর্তমান জেলা সম্পাদক সাহেদ আকন সম্রাট ও আকতার হোসেন মেবুলের সাধারণ সম্পাদক হবার জন্য লবিং এর কথা শোনা যাচ্ছে। তবে সাংগঠনিক ক্যারাইটেরিয়াম মোমেন-রাব্বির কমিটিই অনেকাংশে যোগ্য বলে দাবি করেছেন সকলে। এ সম্পর্কে আলাপকালে জিএম আতায়ে রাব্বি জানান, প্রায় এক যুগ ছাত্রদলের বরিশাল মহানগরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। যদি যুবদল থেকে এ পদ দেয়া হয় তবে পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জেলা যুবদলকে সাংগঠনিক ও শক্তিশালী করার ইচ্ছাও পোষণ করেন তিনি।