বরিশাল বিভাগ সাংবাদিক সমিতি ঢাকা’র প্রীতি সম্মেলণে বক্তারা – বরিশাল বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে

খোন্দকার কাওছার হোসেন ॥ বরিশাল বিভাগের সার্বিক উন্নয়নের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে জোর দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বরিশাল বিভাগ সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত প্রীতি সম্মেলন অনুষ্ঠানে এ দাবি তুলে ধরা হয়। প্রীতি সম্মেলনে সাংবাদিক রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবি বলেছেন, দেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের মানুষের অনেক অবদান রয়েছে। কিন্তু উত্তরাঞ্চলের চেয়েও অবহেলিত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের এ বিভাগটি। তাই অবিলম্বে পদ্মাসেতুসহ শিল্প-কারখানা স্থাপন করে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশপাশি সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে সরকারের পাশপাশি সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। সমুদ্র সৈকত কোয়াকাটাকে অধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলর প্রতিও আহ্বান জানান তারা।

দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক ও সংগঠনের সভাপতি আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল সোবাহান চৌধুরী, দৈনিক সমকালের সম্পাদক ও সংগঠনের উপদেষ্টা গোলাম সরওয়ার, ইতিহাসবীদ সিরাজউদ্দিন আহমেদ, বিএফইউজে মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, যুব দল অনুষ্ঠানে ওয়ার্কর্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ, বিশিষ্ঠ সাংবাদিক বিএফইউজে’র সাবেক মহাসচিব আলতাফ মাহমুদসহ ঢাকায় কর্মরত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার সাংবাদিরা উপস্থিত ছিলেন।

আলাপ আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রীতিভোজ ইত্যাদি দিনব্যাপী আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালিত এ প্রীতি সম্মেলনের আলোচনা সভার সঞ্চালনায় ছিলেন বরিশাল বিভাগ সাংবাদিক সাধারন সম্পাদক ইলিয়াস খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রীতি সম্মেলনের আহ্বায়ক ও সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম মির্জা।

অনুষ্ঠানের আয়োজকদের ধন্যবাদ দিয়ে আমির হোসেন আমু বলেছেন, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বিভাজন প্রতিটি শ্রেণী পেশার মানুষকে আজ বিভক্ত করে দিয়েছে। এ অবস্থায় সকলকে এক জায়গায় একিভূত করা সত্যি কঠিন। আর এ বিভাজনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পুরো জাতি। অন্যান্য শ্রেণী পেশার মতো সাংবাদিকদের মধ্যে এ ধরনের বিভাজন থাকা উচত নয়, কারণ সাংবাদিকদের কোন দলের পক্ষে নয় দেশ জাতি ও গণতন্ত্রের স্বর্থে কাজ করা উচিৎ।

সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকান্ড প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আমু আরও বলেন, আমরা আশা করি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিরা ধরা পরবে ও শাস্তি পাবে। এটাকে একটি দুর্ঘটনা মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার যদি তদন্তে গাফিলতি করে দোষীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে, রাষ্ট্রীয় মদদে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটায় তবেই সরকারের বিরুদ্ধে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ আনা সম্ভব। কিন্তু বিগত সরকারের মতো এ সরকার এমন কোন কাজ করেনি যাতে মানুষ নিরাপত্তাহীন বলা যাবে। যে কোন বিষয়কে রাষ্ট্রীয় বিষয় হিসেবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যা ঠিক নয়। পদ্মাসেতুর কাজ দ্রুত শুরু হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, এটা শুধু দক্ষিণ বঙ্গের মানুষের উন্নয়নের জন্য নয় দেশের সার্বিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করেই দ্রুত শুরু হওয়া উচিত।

আলোচনা ও মধ্যাহ্ন ভোজ শেষে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী আব্দুল জব্বার, ফকির শাহবুদ্দিন, আলম আরা মিনু, সিমি সবনমসহ দেশবরেণ্য শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বরিশালের আঞ্চলিক গান গেয়ে শোনান বরিশালের চন্দ্রদ্বীপ শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা।