পুরো উপজেলাবাসীর মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। সরকারি ভাবে জারিকৃত রেটএ্যালাট উপক্ষো করে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে পরিক্ষা ছাড়াই গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করার অভিযোগ যাওয়া গেছে। এছাড়াও স্থানীয় প্রাণী সম্পদ বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা সরকারি ভাবে বরাদ্দকৃত ভাকসিন সংকটের কথা বলে চড়ামূল্যে বিক্রি করছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী পৌর এলাকাসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ৬০ হাজার ৫’শ ৯৩ টি গবাদি পশু (গরু) রয়েছে। এ্যানথাক্স ভ্যাকসিনের চাহিদা রয়েছে ২ হাজার। সরকারি ভাবে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৫’শ ভ্যাকসিন। যা চাহিদার তুলনায় খুবই কম। সূত্রে আরো জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টম্বর থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভেটেনারী ফিল্ড এসিষ্ট্যান্ড মোঃ শাহজাহান হোসেন বার্থী ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে, মোঃ মতিউর রহমান মাহিলাড়া ও বাটাজোর ইউনিয়নে এবং আবুল হাসান আজাদ সরিকল ও নলচিড়া ইউনিয়নে ৪’শ ভ্যাকসিন বিলি করেছেন।
বাটাজোর গ্রামের গণি হাওলাদার অভিযোগ করেন, ভ্যাকসিন সংকটের অজুহাত দেখিয়ে ভেটেনারী ফিল্ড এসিষ্ট্যান্ড মতিউর রহমান তার কাছ থেকে ২’শ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এভাবেই ভ্যাকসিন প্রদানের নামে ভেটেনারী ফিল্ড এসিষ্ট্যান্ডরা ১ থেকে ২’শ টাকা করে হাতিয়ে নেন। ১ থেকে ২’শ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রাণী সম্পদ বিভাগের মিস্রকী জহুরুল ইসলাম খোকন বলেন, সরকারি ভাবে টি.এ বিল পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় তৈল খরচ বাবদ ভ্যাকসিন নেয়া গরুর মালিকদের কাছ থেকে কিছু টাকা নেয়া হয়।
গোরক্ষডোবা গ্রামের মতলেব মাঝি, সরিকল গ্রামের সোহরাব গোসেন, নলচিড়া গ্রামের লিয়াতকসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, তাদের এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারে পরিক্ষা ছাড়াই গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। পৌর এলাকার বাসিন্দা সবুজ খান বলেন, স্থানীয় মাংস ব্যবসায়ীরা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে নামে মাত্র সনদ নিলেও একই সনদ দিয়ে একাধিক গরু জবাই করে বিক্রি করছেন। এ অভিযোগ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আইয়ুব আলী বলেন, একজন ভেটেনারি সার্জনের পক্ষে গোটা উপজেলার তদারকি করা সম্ভব নয়। আমি উপজেলার তালিকা ভূক্ত মাংস ব্যবসায়ীদের গরু জবাইর পূর্বে সনদ নেয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছি। মাংস ব্যবসায়ীরা না আসলে আমার কি করার আছে। এ ব্যাপরে পুলিশ প্রশাসনের তৎপর হওয়া উচিত।
গতকাল শনিবার সকাল ৯ টা থেকে বেলা সাড়ে বারোটা পর্যন্ত গৌরনদী উপজেলা প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে অবস্থান নিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। এসময় উপজেলার কটকস্থল গ্রাম থেকে আসা কালাম সরদারের স্ত্রী সাহিদা বেগম (৩৮) বলেন, গতকাল শনিবার সকালে আমার একটি বকনা বাছুরের কাপানি রোগ দেখে এ্যানথাক্স আতংকে ভ্যানযোগে বাছুরটি নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। দুই ঘন্টা অপেক্ষা করার পরেও হাসপাতালের কাউকে না পেয়ে এখন অসুস্থ্য বাছুর নিয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি। একই ভাবে জানালেন, উপজেলার দিয়াশুর গ্রাম থেকে আসা আব্বাস আলীর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, ধানডোবা গ্রাম থেকে আসা কদম আলী সরদার, চেংগুটিয়া গ্রামের ফার্ম মালিক মনির হোসেনসহ হাসপাতালে আসা অনেকেই।
বাজারের ব্যাগ হাতে দুপুর সাড়ে বারোটার সময় হাসপাতালে আসেন প্রাণী সম্পদ বিভাগের মিস্রকী জহুরুল ইসলাম। তার কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে আসেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আইয়ুব আলী। দীর্ঘসময় হাসপাতাল বন্ধ থাকা প্রসংঙ্গে ডাঃ আইয়ুব আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালের অন্যান্য ষ্টাফদের থাকার কথাছিলো। আমি বাসায় ছিলাম, আসতে একটু দেরি হয়েছে।