বাজারের মধ্যে প্যান্ডেল বানিয়ে চলছে সমাপনি পরীক্ষা

আর এ প্যান্ডেলের আস পাশে ছোট-ছোট শিশুদের কোলাহল। পাশেই সোলায়মান খানের চায়ের দোকানে লোকজনের আড্ডা। এইডা কোন পরীক্ষা কেন্দ্র হইল, বাজারের মানুষ চারিদিক দিয়া আহে আর যায়। এত শব্দের মধ্যে ছাত্র-ছাত্রীরা কি কইরা পরীক্ষার লেহা লেখবে” কথাগুলো বলছিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন (৫০), তৈয়ব আলী (৩৮) সহ অনেকেই। এভাবেই বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা বাজারের মধ্যে গত তিনদিন ধরে চলছে ৫ম শ্রেণীর সমাপনি পরীক্ষা। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে সংশ্লিদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের ২৪টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ও দুটি মাদ্রাসার ৫’শ ২১ জন শিক্ষার্থীর ৫ম শ্রেণীর সমাপনি পরীক্ষার জন্য মধ্যসাতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারন করা হয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মোঃ সোহরাব হোসেন জানান, এই স্কুলটি সাতলা বাজারের মধ্যস্থানে অবস্থিত। স্কুলের পর্যাপ্ত পরিমান জায়গা না থাকায় স্কুলের পিছনে বাজারের খোলা জায়গায় পরীক্ষা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এজন্য ডেকরেটর ভাড়া নিয়ে উপরে সায়মানা টানিয়ে চারিপাশে রঙ্গিন কাপরের ঘের দিয়ে বেড়া তৈরী করে পরীক্ষা কেন্দ্র তৈরী করা হয়েছে। স্কুল কমিটির সভাপতি মোঃ ফাইজুল হক জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রটি তৈরী করতে তাদের প্রায় দশ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এই অর্থ স্থানীয় ভাবে অভিভাবক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হয়েছে। স্থানীয় মোঃ গিয়াস উদ্দিন, মোঃ আবুল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাজারের মধ্যে পরীক্ষা কেন্দ্র নির্মান করায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে বিঘœ ঘটছে। বাজারের আশ পাশের দোকানের লোকজনের কপথকথোনের শব্দে পরীক্ষার্থীদের সমস্যার সৃষ্টি হয়। এছাড়া প্যান্ডেলের সায়মনা নিচু করে ঝুলানোর কারনে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে আলোর সল্পতা রয়েছে।

পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, বেঞ্চে গাদাগাদি করে পরীক্ষার্থীদের বসতে হয়েছে। নিচে মাটি স্যাত স্যাতে কোথাও কোথাও কর্দমাক্ত ভিজে মাটি। বাজারের ব্যাবসায়ী মোঃ ইদ্রিস মিয়া জানান, প্রতি বুধবার ও রবিবার এ বাজারে স্থানীয় সাপ্তাহিক হাট বসে। পরীক্ষা চলাকালীন সময় পর্যন্ত দুই দিন হাটের মধ্যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার্থী সারমিন আক্তারের মা সাতলা গ্রামের মস্তফা বিশ্বাসের স্ত্রী বেবী বেগম (৪০), নাজমীনের মা দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী তাসলিমা বেগম জানান, বাজারের খোলা পরিবেশে ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিহীন পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার মোঃ হারুন-অর রশিদকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি খোলা বাজারের মধ্যে কোলাহল পরিবেশে পরীক্ষা নেয়ায় শিক্ষার্থীদের সমস্যার হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছি কিন্তু কেন্দ্র সচিব ও স্কুল কমিটি তা পরিবর্তন করে নিয়েছেন। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসারের এ বক্তব্যকে প্রত্যাখান করে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফাইজুল হক বালী বলেন, শিক্ষা অফিসারের সাথে আলোচনা সাপেক্ষই সব কিছু করা হয়েছে।