বরিশালে বিএনপির মিছিলে পুলিশের কয়েক দফা লাঠিচার্জ ॥ টিয়ার সেল নিক্ষেপ

বের করার প্রাক্কালে ও মিছিলের ওপর পুলিশ দফায় দফায় ব্যাপক লাঠিচার্জ করেছে। এ সময় বিএনপির কর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ করে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। প্রায় আধাঘন্টাকালব্যাপী পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও পুলিশের লাঠিচার্জে বিএনপির কমপক্ষে ৩০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ এসময় ৬ জনকে আটক করেছে। এনিয়ে পুরো নগরীতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরেছে। এ ঘটনার পর নগরীর গুরুতপূর্ণস্থানে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।


সূত্রমতে, বেলা পৌনে ১১টার দিকে হরতালের সমর্থনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করার প্রাক্কালে জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক ও কামরুল আহসান শাহীনের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা সদর রোডস্থ জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে প্রবশের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদেরকে বাঁধা প্রদান করে। পুলিশী বাঁধায় তারা দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ না করে রয়েল রেস্তোরার সামনে অবস্থান নেয়। পুলিশ সেখান দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালিয়ে বিএনপি নেতা মন্টু খান ও ২৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক মরিুজ্জামানকে আটক করে।
বেলা ১১টার দিকে জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক ও বাকেরগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হোসেন খানের নেতৃত্বে মিছিল সহকারে দলীয় কার্যালয়ে দিকে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ মিছিলের ওপর লাঠিচার্জ করে। এক পর্যায়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ওই মিছিল থেকে আটক করা হয় বাকেরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির হাওলাদার, নেয়ামতি ৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি আব্বাস ও ছাত্রদল নেতা রেজভী আহম্মেদকে। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হয় বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী।


বেলা সোয়া ১১টায় সরকারী বরিশাল কলেজের সাবেক ভিপি জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আবুল কালাম শাহীন, মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক আলী হায়দার বাবুলের নেতৃত্বে অপর একটি মিছিল ফকির বাড়ি রোড থেকে দলীয় কার্যালয়ের দিকে আসার চেষ্টা করে। ওই সময় পুলিশ তাদের ওপরও লাঠিচার্জ করে। এসময় বিএনপির নেতা-কর্মীরাও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে এক পর্যায়ে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। এ সময় আহত হয় বিএনপির আরো ১০ নেতা-কর্মী।


একই সময়ে বগুড়া রোডস্থ সদর গার্লস হাই স্কুলের সম্মুখ থেকে সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের সমর্থকরা হরতালের সমর্থনে একটি মিছিল বের করা হয়। পুলিশ তাদের মিছিলেও ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। লাঠিচার্জে আহত হয় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জি.এম আতায়ে রাব্বী, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিপন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি খান মোহাম্মাদ আনোয়ার, ছাত্রদল নেতা মামুন মোল্লা, সাইফুল ইসলাম সুজন, শামীম রেজা, জাবের আবদুল্লাহ সাদীসহ কমপক্ষে ১০জন। ওই মিছিল থেকে আটক করা হয় ১৭ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মলয় কর্মকারকে।


এ ঘটনার পরপরই নগরীর সদর রোড, ফকির বাড়ি রোড, কাকলীর মোড়, বগুড়া রোডসহ গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক এমপি আবুল হোসেন খান বলেন, পুলিশ শান্তিপূর্ন মিছিলে হামলা করেছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা কোন বিশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি করেনি। পুলিশ আকস্কিক ভাবে হামলা চালিয়েছে। অপরদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ডাঃ আব্দুর রহিম বলেন, যে কোন অপ্রতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। বিএনপির কর্মীরা মিছিলে বিশৃংখল পরিবেশ সৃষ্টি করায় আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রনে রাখতেই পুলিশ নামেমাত্র ভূমিকা নিয়েছে।