শহীদ স্বামীর ছবি নিয়ে আজও কেঁদে যাচ্ছেন মারিয়া

স্বাধীনতা যুদ্ধের ৩৯ বছর পরেও তারা শহীদ পরিবারের মর্যাদা পাননি তাই স্বামীর ছবি বুকে নিয়ে আজও কেঁদে চলেছেন শহীদ স্যামূয়েল হালদারের স্ত্রী মারিয়া হালদার (৬৯)।

মুক্তিযুদ্ধে নিহত স্বামীর ছবি বুকে নিয়ে আজো কাঁদেন আগৈলঝাড়ার মারিয়া হালদারআগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার গ্রামের খ্রীস্টান পল্লীতে বিধবা মারিয়া হালদারের বসবাস। সেখানে গিয়ে কথা হয় সেদিনের প্রত্যক্ষদর্শী মারিয়া হালদারের সাথে। একে একে বলে যান সেই বিভীষিকাময় দিনগুলোর কথা। তার ভাসুর পুত্র ফ্রান্সিস হালদারের মুক্তিবাহিনীতে যোগদান করার খবর পেয়ে স্থানীয় রাজাকাররা গৌরনদী কলেজের ক্যাম্পে অবস্থানরত পাকহানাদারদের জানালে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে দু’টি ¯পীডবোট নিয়ে গৌরনদী থেকে ফ্রান্সিসকে খোঁজার জন্য ওই খ্রীস্টান পল্লীতে হানা দেয়। পাকসেনারা তাদের এলাকায় ঢুকেছে এ খবর পেয়ে মারিয়া তার ৩ পুত্র ও ২ কন্যাকে নিয়ে বাড়ির পাশে বাগানে লুকিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা পায়নি তার স্বামী। পাকসেনারা ফ্রান্সিসকে না পেয়ে মারিয়ার স্বামী স্যামূয়েল হালদার, ১৩ বছরের পুত্র মুকুল হালদার, ভাসুর হরলাল হালদার, নরেন্দ্রনাথ হালদার, অপর ভাসুর পুত্র টমাস হালদার, অগাস্টিন হালদার, বিমল হালদার, দানিয়েল হালদার ও সুকুমার হালদারকে পীডবোটে তুলে নিয়ে যায় পার্শ¦বর্তী বাকাল হাটের কাছে। সেখানে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে একে একে ৯জনকেই গুলি করে পাকহানাদাররা। সেই গুলিতে মারিয়ার স্বামী স্যামূয়েল হালদারসহ ৭জন শহীদ হলেও ভাগ্যক্রমে গুলিবিদ্ধ হয়েও প্রাণে বেঁচে যান মারিয়ার বড়পুত্র মুকুল হালদার ও ভাসুর পুত্র সুকুমার হালদার। তীব্র ক্ষোভ নিয়ে মারিয়া হালদার বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরেও তাদের খ্রীস্টানপলীর ৭ শহীদের গণকবরের খবর কেউ নেয়নি। এমনকি কোন সরকারের সময় শহীদ পরিবার হিসেবেও তাদের কোন আমন্ত্রণ বা মর্যাদা দেয়া হয়নি। বর্তমান তাদের বিষয়ে কি করেন সেটা দেখার অপেক্ষায় আছেন শহীদজায়া মারিয়া হালদার।