গরঙ্গল আবাসন প্রকল্পের ৫ কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাত

প্রকল্পের প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ৬ একর সম্পত্তি বেহাত হয়ে গেছে। জালজালিয়াতির মাধ্যমে সরকারী ওই সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন আব্দুল জলিল আকন নামের স্থানীয় প্রভাবশালী এক বিএনপি নেতা।

সূত্র মতে, এলাকার দুঃস্থ ও অসহায় লোকজনদের বসবাসের জন্য বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে (২০০০ সালে) তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ উপজেলার বোরাদী গরঙ্গল এলাকায় আবাসন প্রকল্প নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেন। এজন্য আড়িয়াল খাঁ নদীর শাখা পালরদী নদীর তীরবর্তী (কয়ারিয়া লঞ্চঘাট) এলাকায় ৫.৭৫ একর সরকারী খাস জমি বেঁছে নেয়া হয়। ত্রাণ ও পূর্ণবাসন অধিদপ্তর দু’দফায় আবাসন প্রকল্পের মাটি ভরাটের জন্য ৩০লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়। পরবর্তীতে বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে মুলভূখন্ডের মাঝখানে পুকুর খনন করে চারিপার্শ্বে গৃহনির্মানের জন্য ৫ ফুট উঁচু করে মাটি ভরাটের কাজ সমাপ্ত করা হয়। সরকার পরিবর্তনের পর পরই (২০০১ সালে) স্থানীয় প্রভাবশালী ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল আকন সরকারী খাসের ওই জমির মালিকানা দাবি করে ভূয়া কাগজপত্র দিয়ে স্থানীয় ভূমি অফিসে একটি আবেদন করে। ভূয়া কাগজপত্রর রহস্য ফাঁস হয়ে গেলে তার আবেদনটি খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে তিনি (জলিল আকন) ভূমি অফিসের রায়ের বিরুদ্ধে বরিশাল সহকারী জজ আদালতে আপিল করলে আদালতও তা খারিজ করে দেয়। ২০০৬ সালে বিএনপি নেতা জলিল আকন ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন মামলা করলে আদালত স্থিতি অবস্থা জারি করেন। হাইকোর্টের ওই আদেশকে পুঁজি করে প্রভাবশালী জলিল আকন আদালতের নামে সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে পুরো প্রকল্পের জমি দখল করে নেয়। সেই থেকে অদ্যবর্ধি জলিল আকন ও তার সহযোগীরা পুরো আবাসন প্রকল্পটি দখলে রেখে পুকুরে মাছ চাষ ও গৃহনির্মানের জমিতে চাষাবাদ করে আসছে।

সূত্রে আরো জানা গেছে, হাইকোর্টে রিভিশন পিটিশন দাখিলের সময় প্রকল্পের জমির কাগজপত্র জমা না দিয়ে জলিল আকন অন্যস্থানে অবস্থিত তার নিজস্ব জমির কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। সঠিক তথ্য গোপন রাখার কারনে আদালতের কাছে মূল বিষয়টি অজ্ঞাত রয়ে যায়। খবর নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ ওই জমির ধারে কাছেও যায়নি স্থানীয় ভূমি অফিস বা উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। যে কারনেই প্রভাবশালী জলিল আকন গত পাঁচ বছরে আবাসন প্রকল্পের পুকুরে মাছ চাষ ও জমিতে চাষাবাদ করে কামিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। বিষয়টি দেখেও না দেখার ভ্যান করছে স্থানীয় প্রশাসন।

এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। মামলা নিস্ফতি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কিছুই করার নেই। অভিযুক্ত জলিল আকনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিকেস্তি পয়েস্তি আইন অনুসারে আমরা ওই জমির মালিক। তবে সে আইন বাতিল হলে জমি ছেড়ে দিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।