একটু বৃষ্টিতেই গৌরনদী পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা

বাসষ্ঠ্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে কৃত্রিম বন্যায় রূপ নিয়েছে। ফলে স্থানীয় জনসাধারন ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারনে গৌরনদীর অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাঁটু পানি পাড়ি দিয়ে স্কুল ও কলেজে যাতায়াত করতে হয়। ফলে বর্ষা মৌসুমের দুর্গন্ধ ও ময়লা আবর্জনার পানিতে অনেকেই চর্ম এলার্জিসহ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

সরেজমিন ঘুরে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদী বাসষ্ঠ্যান্ড থেকে গৌরনদী সদর গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজ ব্রীজ সংলগ্ন, গৌরনদী বাসষ্ঠ্যান্ড সুপার মার্কেট, টরকী বন্দর এলাকায় পৌর কর্তৃপক্ষ ২০০১ সনে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মান করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্মানকৃত ড্রেনে পানি অপসারন না হওয়ায় ক্রমেই পৌরবাসীকে জনদুর্ভোগ পোহাতে হয়। অপরিকল্পিতভাবে পানি নিস্কাসনের জন্য ড্রেন, বাড়ি, দোকান-ঘর ও রাস্তা নির্মানের ফলে পৌরসভার উত্তর বিজয়পুর, দক্ষিণ বিজয়পুর, গেরাকুল, চরগাধাতলী, টিকাসার, উত্তর বিজয়পুর মরহুম আব্দুর রাজ্জাক ফকিরের বাড়ির চারপাশে ও গৌরনদী বাসষ্ঠ্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার কারনে কৃত্রিম বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার লোকজন পৌর এলাকায় বাস করেও পুরো বর্ষা মৌসুমে হাটু পানির মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হয়। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হচ্ছে।

গৌরনদী বাসষ্ট্যান্ডের ব্যবসায়ী জুবায়েরুল ইসলাম জানান, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পার্শ্বে গৌরনদী হাইওয়ে থানার সম্মুখে সামন্য একটু বৃষ্টিতেই হাটু সমান পানি জমে যাওয়ায় হাইওয়ে থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্য, গৌরনদীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের দুরপাল্লার বাস যাত্রী ও সরকারী গৌরনদী কলেজের শিক্ষার্থীদের সীমাহীন দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়াও গৌরনদী বন্দর সড়কের সিসিডিবি’র সম্মুখের রাস্তায় পৌরসভা কর্তৃক ড্রেন নির্মান করা হয়। কিন্তু ড্রেন দিয়ে পানি অপসারিত হয়ে নদীতে না গিয়ে পানি উল্টো দিকেই নেমে আসে। ফলে বাসষ্ঠ্যান্ড থানা সড়কটি একটু বৃষ্টিতেই হাটু পানি জমে ডুবে যায়। পৌর সদরের গৌরনদী গার্লস হাই স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে, গেরাকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে, আল-হেলাল ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা ও আল-হেলাল রেজিষ্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একটু বৃষ্টিতেই গোটা স্কুল চত্বর পানিতে ডুবে গিয়ে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। ফলে শিক্ষার্থীদের হাটু পানির মধ্য দিয়ে স্কুলে আসা যাওয়া করতে হয়। ফলে অনেক সময় পানিবাহিত রোগসহ বিভিন্ন ব্যধিতে শিশুরা আক্রান্ত হয়ে থাকে।

উত্তর বিজয়পুর গ্রামের নান্নু হাওলাদারসহ একাধিক পৌর নাগরিকেরা বলেন, প্রথম শ্রেনীর পৌরসভায় আমাদের বসবাস। পৌরসভার হোল্ডিং ট্র্যাক্স প্রদান করা সত্বেও আমরা প্রতিনিয়ত পৌরসভার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। জরুরি ভিত্তিত্বে পরিকল্পিত ড্রেন নির্মান, স্কুলের মাঠ ভরাটের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দুর করনের জন্য পৌরবাসী বর্তমান পৌরসভার মেয়রের কাছে জোড় দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে গৌরনদী পৌরসভার মেয়র মোঃ হারিছুর রহমান হারিছ বলেন, বিগত আমলে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেন নির্মানের সত্যতা রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে পৌরবাসীর ভোগান্তি লাঘবে প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিকল্পিত ড্রেন নির্মানের আশ্বাস দিয়ে তিনি ড্রেন নির্মানে জমি দেয়ার জন্য পৌরবাসীর প্রতি আহবান করেন। এছাড়া স্কুলের মাঠ ভরাটের ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।  

খোকন আহম্মদে হীরা-গৌরনদী ডটকম

You may also like