তিতাস গ্যাসের এক কর্মচারী একটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে

নির্মান করায় একটি পরিবার গত দেড় মাস যাবত অবরুদ্ধ হয়ে পরেছে। ওই পরিবারের স্কুল-কলেজগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ও অন্যান্য সদস্যরা এখন কাঠের মই দিয়ে ওয়াল বেয়ে যাতায়াত করছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী ও তিতাস গ্যাসের এক কর্মচারীর এহেন রোষানল থেকে রেহাই পেতে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় প্রসাশন ও পৌর কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ঘটনাটি বরিশালের গৌরনদী পৌর সদরের তিখাসার মহল্লার।

সরেজমিনে জানা গেছে, গৌরনদী পৌর এলাকার দিয়াশুর গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম ওরফে সহিদ হাওলাদার ১১ বছর পূর্বে পৌর সদরের তিখাসার মৌজার এস.এ ৯১৪/৯১৫ নং দাগে ৫ শতক জমি ক্রয় করে বসত বাড়ি নির্মান করে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি ওই বাড়ির সম্মুখের একই দাগের ৬ শতক জমি ক্রয় করেন উপজেলার পিঙ্গলাকাঠি গ্রামের বাসিন্দা ও তিতাস গ্যাস কোম্পানী লিমিটেডের বাখরাবাদ চট্টগ্রাম অফিসের ওয়ারলেন্স অপারেটর মোঃ আলী হোসেন বেপারী। জমি ক্রয়ের পর তিনি ওই জমিতে পাঁকা বাউন্ডারী নির্মান করতে গিয়ে জমির দক্ষিন সীমানায় থাকা শহিদুল ইসলামের বাড়িতে প্রবেশের একমাত্র রাস্তার এক পাশের ইটের দেয়াল ভেঙ্গে রাস্তার জমি দখল করে নেয়। ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম এতে বাঁধা দিলে তাকে ও তার স্ব-পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। ওইসময় ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম স্থানীয় থানা পুলিশের দ্বারস্ত হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা বন্ধের কাজে বাঁধা দেয়।

গত ২৭ মার্চ আলী হোসেন স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগীতায় রাস্তার ওপর পাঁকা দেয়াল নির্মানের কাজ শুরু করেন। উপায়অন্তুর না পেয়ে ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম গত ১৮ মে বরিশাল অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। সংশ্লিষ্ট আদালত ওই জমিতে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখা ও রাস্তা দখলের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গৌরনদী থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশ পেয়ে গৌরনদী থানা পুলিশ ওই জমিতে কোন দেয়াল বা স্থাপনা নির্মান না করার জন্য আলী হোসেনকে নির্দেশ দেয়। আদালত ও পুলিশের নির্দেশকে উপেক্ষা করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সহযোগীতায় আলী হোসেন গত দেড় মাস পূর্বে রাস্তার মধ্যে ১২ ফুট উচু পাঁকা দেয়াল নির্মান করেন। সেই থেকে অদ্যবর্ধি শহিদুল ইসলাম তার পরিবার-পরিজন নিয়ে বসত বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে পরেছেন। প্রতিনিয়ত ১২ ফুট উঁচু দেয়ালের দু’পার্শ্বে মই বসিয়ে মই বেয়ে ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামের কলেজ পড়ুয়া কন্যা জুলিয়া আক্তার, স্কুল পড়ুয়া পুত্র রাকিব হোসেন, ইমরান হোসেন ও স্কুলগামী কন্যা প্রীতি ইসলাম অন্তু দেয়াল পার হয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। একইভাবে ওই পরিবারের লোকজন মই বেয়েই যাতায়াত করছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, তিতাস গ্যাসের কর্মচারী আলী হোসেন পাশ্ববর্তী চরগাধাতলী মৌজার দলিল উদ্দিনের কাছ থেকে গত ৪ বছর পূর্বে ১০ শতক জমি ক্রয় করেন। ওই জমির চারিপার্শ্বে বাউন্ডারী দেয়াল নির্মান করে একই ভাবে পাশ্ববর্তী বাসিন্দা ইয়াসিন সরদার, বাবু ইসলামসহ ৩টি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

এ ব্যাপারে গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম-পিপিএম’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শহিদুল ইসলাম থানায় অভিযোগ করার পূর্বেই আলী হোসেন বাউন্ডারী দেয়াল নির্মান করে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। আমিতো কারো পাকা দেয়াল ভাঙ্গতে পারিনা। তবে শহিদুলের বাড়ি থেকে বের হওয়ার বিকল্প রাস্তা বের করার চেষ্টা চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অভিযুক্ত তিতাস গ্যাসের কর্মচারী আলী হোসেন রাস্তার জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ক্রয়কৃত জমিতে আমি বাউন্ডারী দেয়াল নির্মান করেছি। তাতে কার কি অসুবিধা হয়েছে তা আমার দেখার বিষয় নয়।