হাসানাত-হিরন সমর্থকদের মধ্যে সংর্ঘষ ॥ গুলি বর্ষন

হাসানাত আবদুল্লাহ’র ও বিসিসি মেয়র শওকত হোসেন হিরনের সমর্থকদের মধ্যে শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় গুলি বর্ষনের ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করেছে। দু’গ্র“প এখনও মারমুখী অবস্থানে রয়েছে। গোটা নগরীতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

জানা গেছে, বরিশাল মহানগর শ্রমিকলীগের আহবায়ক ও হাসানাতের ঘনিষ্ট সহচর আফতাব হোসেন তার সমর্থকদের নিয়ে শুক্রবার ভোরে রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক পথে ব্যাপক শোভাযাত্রায় সজ্জিত হয়ে নগরীতে প্রবেশের চেষ্টা করে। নগরীর প্রবেশদ্বার গড়িয়ারপাড় সংলগ্ন ছয়মাইল নামকস্থানে বেলা ১১টায় আফতাবের বহরটি পৌঁছে। এ সময় পূর্ব থেকে অবস্থান নেয়া হিরন সমর্থকেরা ৩ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষন করে অস্ত্র সজ্জিত হয়ে আফতাবের বহরকে ধাওয়া করে। একই সঙ্গে মহাসড়কে গাছ ফেলে রাখে যাতে আফতাব গাড়ি বহর নিয়ে সহসাই শহরে ঢুকতে না পারে। উভয় গ্র“পের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে আফতাবের বহরটি পিছু হটতে বাধ্য হয়। তাদেরকে বরিশাল শহরে প্রবেশ করতে দেয়নি হিরন সমর্থকেরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। এছাড়া শহরের বিভিন্নস্থানে হাসানাত ও হিরন সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নগরীর সিএন্ডবি রোডে হিরন সমর্থকরা একটি মাইক্রোবাস ভাংচুর করেছে যার নং (ঢাকা-মেট্রো চ-৫১-০১৮৬)।

এদিকে শ্রমিকলীগ নেতা আফতাব হোসেন বলেন, মেয়র হিরন তার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে আমাকে বরিশালে প্রবেশ করতে বাঁধা প্রদান করেছে। তারা পুলিশের সামনে প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে মহড়া প্রর্দশন করেছে। বিসিসি মেয়র শওকত হোসেন হিরন জানান, আফতাব বরিশালে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে আসছে। তারা ঢাকা থেকে বহর নিয়ে বরিশাল শহরে আসার তো প্রয়োজন পড়ে না। শান্তি শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার আশংকায় হয়তোবা পুলিশ তাকে বাঁধা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে আমার কোন ইন্ধন নেই। বরিশাল বিমান বন্দর থানার ওসি সাখাওয়াত হোসেন জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত। সড়ক দিয়ে গাড়ি চলছে। বিভিন্ন স্পটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্র“য়ারি দুপুরে নির্বার্হী ম্যাজিষ্টেট কামরুজ্জামান এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী পরিচালক জহিরুল ইসলাম নথুল্ল¬াবাদ বাস টার্মিনালে ফিটনেসবিহীন ও অবৈধ যানবাহন আটকিয়ে জরিমানা আদায় করতে ছিলো। ওই সময়ে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক শাহ আলম জরিমানা কম করার জন্য তাদের অনুরোধ করেন। এতে তেলে বেগুনে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ভ্রাম্যমান আদালত। এরপরই পুলিশ শ্রমিক নেতা শাহ আলমকে বেদম মারধর করে। এ ঘটনায় শ্রমিক-পুলিশ সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। সংর্ঘষের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। এরমধ্যে একটি দ্রুত বিচার আইন ও অপরটি পুলিশ আক্রান্ত আইনে মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দুটিতে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আফতাব হোসেন ও সাধারন সম্পাদক শাহ আলমসহ ৫’শ জন শ্রমিককে আসামি করা হয়। ওইদিন বিকেল থেকেই মেয়র হিরন সমর্থকেরা টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে আফতাব বিরোধী মিছিল সমাবেশ করে আসছে। তারা আফতাব মুক্ত টার্মিনালের দাবি তুলে টার্মিনাল দখলে নেয়। এ ঘটনার পর থেকে আফতাব ঢাকায় নিরাপদে অবস্থান নেয়।