বরিশালের চার উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় গড়ে উঠেছে যানবাহন ছিনতাইকারী চক্র

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, উজিরপুর ও বাবুগঞ্জের সিমান্তবর্তী কালিহাতা, ঘন্টেশ্বর, সাকোকাঠী , শাহাজিরা ও চেঙ্গুটিয়া এলাকায় গড়ে উঠেছে হালকা যানবাহন ছিনতাই চক্র। চালককে অচেতন এমনকি হত্যা করে যানবাহন ছিনিয়ে নিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে বিক্রি করছে এ চক্রটি। এদের সর্বশেষ শিকার হয়েছে গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেলার বিশ্বন্তদী গ্রামের আবু তাহের ওরফে তোতা মিয়ার ছেলে আরজু শেখ (১৯)। গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে এই চক্রের সদস্যরা বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের রহমতপুর ইউনিয়নের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতুর পূর্ব পাড়ের ঢালে পাটখড়ি বোঝাই নসিমন চালক আরজু শেখকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে তারা। এরপর পাটখড়ি সেখানে ফেলে নসিমনটি ছিনিয়ে নেয় তারা। ওই রাতে নসিমনটি নিয়ে বামরাইল এবং মানিকবাজার হয়ে ঘন্টেশ্বরের কৌড়াবাড়ির হুলুদ গাছ বাগানে নিয়ে লুকিয়ে রাখে।

পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর ভোরে নগরীর বিমানবন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আরজু শেখের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করে। ওই দিনই থানার এসআই মিলন বিশ্বাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। একই থানার এসআই সিদ্দিককে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

এদিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উজিরপুর থানা পুলিশ ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে কৌড়া বাড়ির হলুদ বাগানে তল্লশী চালিয়ে ছিনতাই হওয়া নসিমনটি উদ্ধার করে উজিরপুর থানা পুলিশ। উজিরপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকুমার রায় বলেন, উদ্ধারকৃত নসিমনটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়ে গেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিমানবন্দর থানার এসআই সিদ্দিক জানান, নসিমন চালক আরজুকে দিকনগর থেকে ভাড়া করে আনে দুর্বৃত্তরা। পথিমধ্যে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে পাটখড়ি ফেলে নসিমনটি ছিনিয়ে নেয় তারা।

তিনি বলেন, ছিনতাই হওয়া নসিমনটি উদ্ধার হয়েছে গৌরনদী, বাবুগঞ্জ ও উজিরপুরের সিমান্তবর্তী এলাকা থেকে। সেখানে রয়েছে এ চক্রের আখড়া। ঘন্টেশ্বরের কালাম চৌকিদারের ছেলে শাহিন এবং কালিহাতার খালেক পিয়নের বাড়ির কালা ও তার জামাতা টাক আবুলকে এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা হয়েছে। তার সাথে আরো কয়েকজন দুর্বৃত্ত রয়েছে। এদের গ্রেপ্তারের চেস্টা চলছে, তবে তিন উপজেলার সিমান্তবর্তী হওয়ায় আসামি ধরা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃত তথ্য বেড়িয়ে আসবে বলে তিনি জানান। অপর দিকে গত ১৮ আগস্ট রাত সাড়ে নয়টার দিকে আগৈলঝাড়া উপজেলার চেঙ্গুটিয়া বাজার থেকে কালকিনি যাওয়ার কথা বলে সুমন সরদারের মটরসাইকেল ভাড়া করে একই এলাকার হাচেন হাওলাদার ও ইসমাইল হাওলাদার। এসময় সুমন তার বন্ধু ভ্যানচালক রহিম হাওলাদারকে (১৭) সাথে নিয়ে যায়। গভীর রাতে সুমন ও রহিমকে উপর্যপুরি কুপিয়ে হত্যা করে কালকিনির দর্শনা আশ্রামের সন্নিকটে ফেলে মটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয়।