নাজিরপুর লঞ্চ ঘাটে লঞ্চ ভেড়া বন্ধ ॥ যাত্রীদের দুর্ভোগ

লালমোহন সংবাদদাতা ॥ লালমোহন তেঁতুলিয়া নদীর নাজিরপুর লঞ্চ ঘাটে লঞ্চ ভেড়া বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় করে মাঝ নদীতে গিয়ে লঞ্চে উঠানামা করতে হচ্ছে। নদীর মাঝে ডুবোচর পড়ার কারণে নাজিরপুর চ্যানেলটি এখন পুরোপুরি বন্ধ। এ কারণে ঢাকা, লালমোহন, চরফ্যাশনের ঘোষেরহাট রুটের লঞ্চ চলাচল ব্যহত হচ্ছে। ড্রেজিং না করার কারণে নাজিরপুর ঘাটে লঞ্চ ভেড়াতে না পেরে তেঁতুলিয়া নদীর মাঝে গিয়ে লঞ্চ নোঙ্গর করে। সেখানে নৌকা দিয়ে যাত্রীরা উঠানামা করছে। নাজিরপুর চ্যানেল দিয়ে লঞ্চ প্রবেশ করতে না পারায় প্রায় ৩ কিলোমিটার দুর দিয়ে ঘুরে লালমোহনের লঞ্চগুলো ঘাটে আসলেও ঘোষের হাট রুটের লঞ্চ এখন আর নাজিরপুর ঘাটে না ভেড়ায় যাত্রীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৭ নভেম্বর নাজিরপুর ঘাটে কোকো-৪ লঞ্চটি ডুবে থাকার কারণে সেখানে লঞ্চের আশে পাশে ব্যাপক হারে পলি পড়ায় তেঁতুলিয়া নদীর নজিরপুর চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে গেছে। ওই স্থানসহ তেঁতুলিয়া নদীতে কোন মার্কা ও বয়া বাতি নেই। ফলে রাতের বেলা ও জোয়ারের সময় ওই রুটে চলা লঞ্চ ও ইঞ্জিনের নৌকা গুলো প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নাজিরপুর লঞ্চ ঘাটের বাসিন্দা নিরব তালুকদার, আব্দুল বারেকসহ একাধিকজন জানান, পলি পড়ে লঞ্চটি মাটির নিচে দেবে গেছে। চারপাশেও ডুবো চর পড়েছে। ফলে ভাটার সময় মাস্তুলের তীর চিহ্নটি আগে দেখা গেলেও এখন আর তাও দেখা যায়না। লঞ্চ যাত্রী নাজমা বেগম রিপা জানান, নাজিরপুর ঘাটে লঞ্চ না ভেড়ার কারণে নৌকা দিয়ে মাঝ নদীতে গিয়ে লঞ্চে উঠতে হয়। এতে শিশুদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এছাড়া নৌকা ভাড়া নিয়ে বিড়ম্বনাতো রয়েছেই।

ঢাকা-চরফ্যাশন নৌ রুটে চলাচলকারী কর্নফুলী -৩ নামক লঞ্চের মাষ্টার মোঃ দেলোয়ার হোসেন তার অভিযোগে জানান, ভোলা লালমোহন উপজেলার নাজিরপুর  লঞ্চঘাট এলাকায় কোকো-৪ ডুবে যাওয়ায় ওই এলাকায় ২শ গজ সামনে ব্যপক ডুবো চর পড়েছে। জোয়ারের সময় ওই স্থানে ডুবে যাওয়া লঞ্চের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়না। এছাড়া ওই রুটে কোন মার্কা ও বয়া বাতি নেই। ফলে র্দুঘটনার শিকার হতে হচ্ছে। একই লঞ্চের পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা মালিকদেরকে সমস্যার কথা বলেছি। পাশাপাশি স্থানীয় সাংসদ নুর নবী চৌধুরী শাওনকে বলা হয়েছে। তারা দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবে বলে আমাদেরকে জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২০০৯ সালের ২৭ নভেম্বর রাত ১১টার সময় এমভি কোকো-৪ নামক লঞ্চটি প্রায় ২ হাজার যাত্রী নিয়ে লালমোহন উপজেলার নাজির পুর লঞ্চ ঘাটের দক্ষিনে বাঁ দিকে কাত হয়ে ডুবে যায়। তখন প্রশাসন ও আইন শৃংখলা বাহিনী ৮১ জন মৃত দেহ উদ্ধার করে। বিআইডব্লিউটিএ উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা-রস্তম দিয়ে যৌথ চেষ্টা করেও লঞ্চটি উঠাতে পারেনি।

লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, লালমোহন ও চরফ্যাশন নৌ-রুটে যাওয়ার নাজিপুর চ্যানেলটি এমনিতেই সরু। লঞ্চটি ডুবে থাকা ও পলি পড়ে ভবিষ্যতে চ্যানেলটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে এ বিষয়ে আমি তেমন কিছু জানিনা। কারন আমি অনেক পড়ে এ এলাকায় এসেছি। তবে বিষয়টি আমি উপর কর্তৃপক্ষকে জানাবো।