চিকিৎসক শূন্য আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

গৌরনদী ॥ “এ্যাইডা কি হাসপাতাল না অন্য কিছু ? এ্যাতো মোগো কোনো কামেই লাগে না। কি দরকার এই রহম হাসপাতালের। ডাক্তারই যদি না থাহে তাহলে সরকার এডা বন্ধ কইররা দিতে পারেনা” চরম ক্ষোভের সাথে কথাগুলো বলছিলেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা পতিহার গ্রামের মোঃ তালেব আলী (৪২)। একই সুরে তাকে সমর্থন দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থিত একাধিক রোগীরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২১টি চিকিৎসক পদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত ২০টি পদ শূন্য থাকায় প্রতিদিন এখানে আগত ইনডোর ও আউটডোরে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা শত শত রোগীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২১ টি চিকিৎসক পদের মধ্যে শুধুমাত্র উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদে একজন চিকিৎসক রয়েছেন। সূত্র মতে, তিনি (উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকায় অধিকাংশ সময়ই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চিকিৎসক বিহীন থাকে। এ ছাড়াও এ হাসপাতালে রয়েছে নার্স (সেবিকা) সংকট। নেই কোন সুইপার। সুইপার না থাকায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দূর্গন্ধ যুক্ত পরিবেশেই কর্মকর্তা কর্মচারীদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জরুরী বিভাগে গিয়ে দেখা যায় চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন আগৈলঝাড়া উপজেলার ভালুকশি গ্রামের কামাল হোসেন (৪২) তিনি জানান, তার পুত্র জাহিদ হোসেন (১৫) সংঘর্ষে রক্তাক্ত জখম হয়, তার অবস্থা খুবই গুরুতর। অথচ বিনা চিকিৎসায় ফিরে যেতে হচ্ছে। একই ধরনের সমস্যার কথা জানালেন, বাকাল গ্রামের নিরাঞ্জন বালা (৪৫), মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি কালকিনি উপজেলার চলবল গ্রামের অমল দত্তের স্ত্রী সুগন্ধা রানী (২৫)। তারা বলেন, মোগো টাহা থাকলে এহানে আইতাম না, এডা নামেই হাসপাতাল। হাসপাতালের পানির পাম্প চালক (জুনিয়র মেকানিক) ধলু মিয়া গত ডিসেম্বর মাসে অবসরে যাওয়ার পর থেকে ৫ মাস যাবত পাম্প চালক না থাকায় পানির অভাবে রোগীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। হাসপাতালের একমাত্র জেনারেটরটি বছরের পর বছর ধরে বিকল হয়ে পরে আছে।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ সহিদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ২১ টি চিকিৎসক পদের মধ্যে শুধুমাত্র আমি আছি। আমিতো না থাকার সামিল, কারন আমাকে অধিকাংশ সময়ই প্রশাসনিক কাজে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরে থাকতে হয়। তখন সেবা ছাড়াই রোগীদের ফিরে যেতে হয়।