কলাপাড়ায় বিএনপি নেতার বসত বাড়ীর জমি দখল

পটুয়াখালী সংবাদদাতাঃ কলাপাড়ায় সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় বিএনপি নেতার বসত বাড়ীর সীমান প্রাচীর ভেঙ্গে ১৩ শতাংশ জমি দখল করে  ঘর তুলেছেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। (তার বাবা ডাঃ কাশেম মুন্সি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি)। রোববার দুপুর থেকে সোমবার পর্যন্ত এ দখল প্রক্রিয় চলছিল।ইতিমধ্যে রাতারাতি দুটি ঘরও তুলে ফেলেছে দখলকারী চক্র।  ঘটনাটি ঘটেছে পৌরশহরের ৬নং ওয়ার্ডের মঙ্গলশুখ সড়কে কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও নীলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক খানের বসত বাড়ীতে। রোববার দুপুর থেকে একই এলাকার  সুজাউদ্দিন মুন্সী গং জোরপূর্বক এ দখল প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করে কলাপাড়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেছেন আঃ মালেক খান। অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুজাউদ্দিন মুন্সী। আবদুল মালেক খান অভিযোগ করে বলেন, কলাপাড়া পৌর শহরের খেপুপাড়া মৌজার ৩৩৬, ৩৯৭ নং খতিয়ানের এবং ৯৫৫, ৯৬১ নং দাগের জমিতে ঘর তুলে পরিবার পরিজনসহ প্রায় ৫২ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। তার বাবা বন্দে আলী খাঁন ১৯৫৯ সালে নিরঞ্জন সেনের কাছ থেকে এই জমে ক্রয় করেছিলেন। দলিলের চৌহদ্দী অনূযায়ি উত্তরের রাস্তা হতে দক্ষিনে এক শত সাড়ে ষোল হাত এবং পূর্বের রাস্তা হতে পশ্চিমে ১শত ৯৫ হাত সীমানার এক একর সাড়ে ১৬ শতাংশ জমির মালিক পৈত্রিক সুত্রে তিনি ও ভাইয়েরা।  অথচ রোববার দুপরে সালাউদ্দিন মুন্সী ও তার ভাইরা এক দল সন্ত্রাসীদের নিয়ে তার বাড়ীর পূর্ব পাশের রাস্তা ডিঙ্গিয়ে সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে জমি দখল করে ঘর উঠাতে শুরু করে। কিছু দিন পূর্বে হঠাৎ করে তার বসত বাড়ির জমি সালাউদ্দিন মুন্সী দাবি করলে তিনি আদালতে মামলা করেন এবং বর্তমানে ওই জমিতে আদালতের স্থিতি অবস্থা রয়েছে বলে দাবী করেন। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, জমি নিয়ে স্থানীয় ভাবে ২০১০ সালের ৩০ আগষ্ট একটি শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানেও তিনি রায় পেয়েছেন। কিন্তু তার পর ও তারা এ দখল প্রক্রিয়া চালায়। এ ব্যাপারে সুজাউদ্দিন মুন্সী বলেন, উক্ত দাগ ও খতিয়ানে ৬১ শতাংশ জমির ক্রয়কৃত মালিক তিনি। আর মালেক খান সাড়ে ৩৯ শতাংশ জমির মালিক। অথচ সে ৫৮ শতাংশ জমি ভোগ দখল করিতেছে। পৌর সভার নিয়োগকৃত সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জমি মেপে আমাদেরকে প¬ট করে দিয়েছে। সে অনুযায়ি আমরা আমাদের জমিতেই ঘর তুলেছি। মালেক খানের জমি আমরা দখল করিনি। এ জমি নিয়ে আদালতে মামলা থাকলেও স্থিতি আদেশের মেয়াদ ০৫/০৫/১১ইং শেষ হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। তবে মালেক খাঁন স্থিতি আদেশের মেয়াদ বৃদ্বি করা হয়েছে দাবী করেন। মালেক খাঁনের শতবর্ষী মা বকফুল বেগম কান্নজড়িত কন্ঠে বলেন, পাকিস্তান আমলে আমার স্বামী এই জমি কেনার পর বসবাস শুরু করি। তার মৃত্যুর পরে মালেক জমির নিচু অংশ ভরাট করে গাছ-পালা লাগায়। এখন শুনি এ জমিতে সুজা’রা ভাগ বসাতে চায় এবং সন্ত্রাসীগো দিয়া হামলা চালিয়ে দখল করেছে। ওগো বিচার আল¬ায় করবে। দখলের পরের অংশের জমির মালিক জয়নব বিবি (৬০) জানান, দেড় বছর আগে মালেক খাঁনের কাছ থেকে ৯ শতাংশ জমি কিনে বাড়ি করেছি। এ জমিতে তাদের বৈধতা না থাকলে ওই দাগ থেকে আমার কাছে বিক্রি করলো কিভাবে ? দখল প্রক্রিয়ার কালে কলাপাড়া থানা পুলিশকে অবহিত করা সত্বেও তাদের কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি এ অভিযোগ সম্পর্কে ওসি ইসাহাক আলী বলেন, কারো ব্যক্তিগত সুযোগ- সুবিধা দেখার জন্য পুলিশ ডিপার্টমেন্ট নয়। এ জমি নিয়ে দ্বন্দ দীর্ঘ দিনের। তিনি আইন-কানুন মানেন না। তারও খামখেয়ালীপনা আছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিরোধীয় জমিতে দখলদারদের অবকাঠামো নির্মান তৎপরতা অব্যাহত ছিল এবং দখল অভিযানকালে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্জ মাহাবুবুর রহমান তালুকদার কলাপাড়া অবস্থান করছিলেন।