গৌরনদীতে যোগেন্দ্র মন্ডল জন্মজয়ন্তী উৎসব – মেলার নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও জমজমাট জুয়ার আসর

গৌরনদী প্রতিনিধি ॥ ভারতের অর্ন্তবঁর্তী কেন্দ্রীয় সরকারের আইনমন্ত্রী ও পাকিস্তান সরকারের আইন ও শ্রম মন্ত্রী বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের মৈস্তারকান্দী গ্রামের স্বর্গীয় যোগেন্দ্র নাথ মন্ডল। ভারত সরকারের “মহাপ্রান” খেতাবপ্রাপ্ত এই নেতার জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে উৎসব কমিটি বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে তিন দিন ব্যাপী মেলার আয়োজন করে। মেলার শুরুর ৭ দিন পূর্বে আয়োজন কমিটি গত বৃহস্পতিবার থেকে বিচিত্রা অনুষ্ঠনের নামে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার জমজমাট আসর বসিয়ে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে সুধীজনের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ভারতের অর্ন্তবঁর্তী কেন্দ্রীয় সরকারের তৎকালীন আইনমন্ত্রী ও পাকিস্তান সরকারের আইন ও শ্রম মন্ত্রী বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের মৈস্তারকান্দী গ্রামের স্বর্গীয় যোগেন্দ্র নাথ মন্ডলের আগামি ২৯ জানুয়ারি ১০৯তম জন্ম বার্ষিকী। এ উপলক্ষে জন্মজয়ন্তী উৎসব পালনের জন্য বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো. শাহজাহান প্যাদাকে সভাপতি ও বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও আওয়ামীলীগ নেতা আ. হালিম.বেপারীকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। উক্ত কমিটি আগামি ২৭ জানুয়ারি থেকে তিনদিন ব্যাপী “যোগেন্দ্র মন্ডল” মেলা বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় হওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ সাত দিন আগেই মেলা শুরু করেন।

বরদুলালী গ্রামের মো. কাঞ্চন আলী (৩৫), মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (২৫)সহ অনেকেই জানান, আয়োজকরা গত বৃহস্পতিবার থেকে স্কুল মাঠে প্যান্ডেল তৈরী করে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার জমজমাট আসর বসিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন টিপিডিও’র নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আলী, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মো. জুলফিকার মিয়া, সতীষ চন্দ্র  ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসএসসি পরীক্ষা অতি সমাগত। এ সময় রাতে উচ্চস্বরে মাইক বাঁজিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। স্কুল শিক্ষক লিটন রাড়ৈ ও বিশ্বজিত দাস বলেন, একজন মহাপুরুষের নামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অর্থের লোভে অসামাজিক কার্যক্রম চালিয়ে যোগেন্দ্র নাথ মন্ডলকে ছোট ও অসম্মান করা হচ্ছে।

আয়োজক কমিটির সদস্যরা ক্ষমতাসীন দলের লোকজন হওয়ায় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়নি। অভিযোগের ব্যাপারে কমিটির সভাপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা মো. শাহজাহান প্যাদার বক্তব্য নেয়ার জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইলে ফোন একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। কমিটির সদস্য সচিব ও বার্থী তাঁরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. হালিম বেপারী অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কমিটিতে আমাকে রাখা হলেও এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা।

গৌরনদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম বলেন, আয়োজক কমিটি স্টল ও বিচিত্রা অনুষ্ঠানের জন্য দশ দিনের অনুমতি নেন। অনুষ্ঠানের আড়ালে অসামাজিক কার্যকলাবের খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে আমি একদল পুলিশ নিয়ে অভিযান চালিয়ে তিনটি চক্রার জুয়ার কোর্ট গুড়িয়ে দেই এবং অশ্লীল নৃত্য বন্ধের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।