বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অধ্যাপক আকন কুদ্দুসুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের রূপকার। তিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক, জাতির আত্মপরিচয়ের স্থপতি এবং জনগণের আস্থা ও আশার প্রতীক। তাঁর আদর্শ আজও আমাদের সংগ্রামের মূল প্রেরণা।’
আজ সোমবার গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলোর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আকন কুদ্দুস দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাহসী ও অবিচল গণতান্ত্রিক নেতৃত্বের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রতিরোধ ও সাহসী গণতন্ত্রের অটল প্রতীক। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সময়ে তিনি অন্যায়ভাবে মুক্ত চলাচল এবং পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে গৃহবন্দী জীবন কাটিয়েছেন। তবুও তিনি ছিলেন গণতন্ত্রের জন্য এক অবিচল সংগ্রামী নেত্রী। তাঁর নেতৃত্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয়, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম কখনো থামে না এবং নতুন প্রজন্মকে এই দায়িত্ব নিতে শেখাতে হবে।’
তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘তারেক রহমান কেবল একজন ব্যক্তি নন, তিনি এক অনুপ্রেরণা, তিনি এক গণজাগরণের নাম। তাঁর নেতৃত্বে মানুষ একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র, আইনের শাসন এবং প্রকৃত গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে। দেশের আপামর জনসাধারণ তাঁকে গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করেছে।’
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক আকন কুদ্দুস বলেন, ‘আমরা গৌরনদী ও আগৈলঝাড়ার ভাগ্য কোনো বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক ও মোনাফেকের হাতে ছেড়ে দিতে পারি না। ওয়ান-ইলেভেনের অন্ধকার সময়ে যারা বিএনপির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, যারা মীরজাফরের ভূমিকা পালন করেছে, তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করতে হবে। দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে আমরা শপথ নিচ্ছি, আর কখনো কোনো বেঈমানকে আমাদের কাতারে ঠাঁই দেওয়া হবে না।’
বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি, মাদক, দখলদার ও চাঁদাবাজদের গডফাদারদের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তারা শুধু সমাজের নয়, রাজনীতিরও শত্রু। জনগণের চোখে তারা অযোগ্য এবং বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত। দেশের মানুষকে প্রকৃত গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব ফিরিয়ে দিতে হলে এদেরকে পরাজিত করতেই হবে। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ হতে হবে স্বচ্ছ, সৎ ও ন্যায়ভিত্তিক।’
তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘একটি ন্যায়পরায়ণ রাষ্ট্র গঠনের জন্য তরুণ প্রজন্মকে জাগ্রত করতে হবে এবং তাদের হাতে নতুন নেতৃত্ব তুলে দিতে হবে। শহীদ জিয়ার আদর্শ, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাহস এবং তারেক রহমানের স্বপ্ন—এই তিনের সমন্বয়েই নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
গৌরনদী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জহুরুল ইসলাম জহিরের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন গৌরনদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এস এম মনির-উজ জামান মনির এবং বিশেষ বক্তা ছিলেন গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম মনজুর হোসেন মিলন।
মো. হেদায়েত হোসেন ও গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রুবেল গোমস্তার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আফজাল হোসেন, সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবুল হোসেন লাল্টু, তাইফুর রহমান কচি এবং গৌরনদী উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি হোসনেয়ারা বেবি।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা বদিউজ্জামান চলঞ্চ মাঝি, আকতার হোসেন বাবুল, জেলা উত্তর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গফুর, বিএনপি নেতা কাজী সরোয়ার এবং মাসুদ হাসান মিটু তালুকদার প্রমুখ।